OrdinaryITPostAd

লেট ম্যারেজ। Late Marriage। শায়খ ড. আলী তানতাবী- pdf

 


শায়খ ড. আলী তানতাবী রহ. লেট ম্যারেজ

LATE MARRIAGE

 

 

[বিশ সহস্রাধিক বৈবাহিক জটিলতা নিরসনের বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে

অনুবাদ, সংকলন সংযোজন ও সম্পাদনা

মাওলানা এস এম আমিনুল ইসলাম

তরুণ লেখক, অনুবাদক, গবেষক ও চিন্তাবিদ

 


ৰইঘৰ
[অভিজাত বইয়ের ঠিকানা]
৪৩ ইসলামী টাওয়ার, ১১/১ বাংলাবাজার,
ঢাকা- ১১০০
ফোন: 01717554727, 01711911409



 

ই | ন | তি | সা | ব

আব্বা-আম্মার

করকমলে

আমাকে যুগল ফ্রেমে আবদ্ধ করতে যাদের অক্লান্ত পরিশ্রম অব্যাহত

রয়েছে অহর্নিশ ॥

অনুবাদক


 

ব ই ঘ র

লেট ম্যারেজ

শায়খ ড. আলী তানতাবী রহ.

 

অনুবাদক

এস এম আমিনুল ইসলাম

 

প্রকাশক

বইঘর -এর পক্ষে এম এম মাশফি

 

সংরক্ষিত

প্রথম প্রকাশ

একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৮

 

প্রচ্ছদ

শাকীর এহসানুল্লাহ

 

কম্পোজ

ব ই ঘর বর্ণসাজ

বাংলাবাজার, ঢাকা- ১১০০

 

মুদ্রণ : জে এম প্রিন্টার্স

২২ ঋষিকেশ দাস রোড, ঢাকা-১১০০

 

মূল্য : ১০০ টাকা মাত্র

 

ISBN: 984-70168-0063-4

LATE MARRIAGE: Written by D. Ali Tantavi, Translate by S M Aminul Islam Published by: M M Mashfi; BhoiGhor: Islami Tower, 11/1 Banglabazar Dhaka-1100; First Edition February 2018 O by the pablisher

Price : /// Taka only


 

কিছুকথা

রচনাজগতে শায়খ আলী তানতাভী এক সুপরিচিত নাম । তিনি একাধারে লেখক, বিচারক, বুদ্ধিজীবী, চিন্তক ও প্রাজ্ঞ বোদ্ধা । বিশেষত তিনি বিংশ শতাব্দীর সাহিত্যাকাশের এক ধ্রুবতারা। সময়ের বাস্তব চিত্রগুলো নিপুণ আলপনায় তুলে ধরেছেন কলমের সাহায্যে। বিশ্বের বিভিন্ন পত্রিকা ও সাময়িকীতে প্রকাশিত তাঁর গবেষণামূলক অসংখ্য প্রবন্ধ-নিবন্ধ ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে । তাছাড়া বিভিন্ন সময়ে তাঁর দেয়া পাঠকের নানা প্রশ্নের জবাব সুবিখ্যাত 'আল আইয়াম'সহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ হয়। মিসরসহ বিশ্বব্যাপি সেগুলো ব্যাপক সাড়া জাগায়। আমরা মনে করি, ঘুণেধরা সমাজের পচনরোধে এসব জ্যোতির্ময় রচনা পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালনে অপরিসীম সহায়ক হবে।

এই অনুভূতি থেকেই ইন্টারনেট, আর্কাইভ, উইকিপিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন মাধ্যমের জ্ঞানসমুদ্রে দুঃসাহসিক সাঁতার কাটতে চেষ্টা করি। তাঁর রচনাসাগর হতে সূচাগ্রে পানির ক্ষুদ্র ফোঁটার মতোই যুবক-যুবতিদের উদ্দেশ্যে রচিত কয়েকটি প্রবন্ধ-নিবন্ধ ও প্রশ্নোত্তর সংকলন করি। বিশেষত 'লেট ম্যারেজ' সংক্রান্ত পুঁতিগুলোকে একত্র করে মুক্তার মালা গাঁথার প্রয়াস পাই। ইতোমধ্যে 'লাভ ম্যারেজ' শিরোনামে এর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি প্রবন্ধ মলাটবদ্ধ হয়েছে। সেখান থেকে লেট ম্যারেজ বিষয়ক লেখাগুলোকে নির্বাচন করার ভিন্ন আবেদন অনুভব করি । পাশাপাশি প্রাসঙ্গিকতার কারণে অন্য কয়েকটি প্রবন্ধ এবং চিঠিও এতে সন্নিবেশিত হয়েছে । আশা করি ভিন্ন স্বাদের এই লেখাগুলো সত্যসন্ধিৎসু পাঠক মহল বিশেষত যুবক-যুবতিদের প্রাণের খোরাক যোগাবে ।

 

সূ. চি. প. এ.

 

বিবাহ কী / ৯

বিবাহের গুরুত্ব ও তাৎপর্য / ৯

বিবাহের প্রয়োজনীয়তা / ১১

বিবাহের উপকারিতায় গবেষণা প্রতিবেদন / ১১

‘সেক্স কালচার' প্রামাণ্য গ্রন্থের রিপোর্ট / ১২

ছেলে-মেয়ের প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার লক্ষণ / ১৩

এ সমাজ না মানছে বিজ্ঞান না মানছে ইসলাম / ১৪

সময়মত বিয়ে না করার কুফল / ১৫

অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ে করার ক্ষতি / ১৬

যৌবন এক পাগলা ঘোড়া / ১৬

ছেলে মেয়ের বিয়ের বয়স / ১৭

বিয়ের বয়স নিয়ে ভানুমতির খেল / ১৯

দেরিতে বিবাহের ভয়াবহতা / ২২

পুরুষের 'লেট ম্যারেজ' এর সমস্যা / ২৫

 নারীর 'লেট ম্যারেজ' এর সমস্যা / ২৫

Age and fertility: Getting pregnant in your 20s / 28

রোগ ও প্রতিষেধক / ৩৩

সব দায় অভিভাবকদের কাঁধে / ৩৫

দেরিতে বিয়ের ফলে মানসিক ক্ষতিসমূহ / ৩৮

যথাসময়ে বিয়ে করার আবশ্যকতা / ৪১

ক্যারিয়ার গঠনের অজুহাত / ৪২

সময়ের কাজ সময়ে করা দরকার / ৪৩

বিবাহ বিমুখতা অসংখ্য রোগের জন্ম দেয় / ৪৪

সময়মতো বিবাহের কল্যাণ প্রমাণে বিজ্ঞানের সর্বশেষ গবেষণা / ৪৭

দ্রুত বিবাহ ধনী হওয়ার উপায় / ৫১

দেরিতে বিবাহ ও ভয়াবহ হস্তমৈথুন / ৫৩

চিকিৎসাবিজ্ঞানে হস্তমৈথুনের ক্ষতিকারক দিকসমূহ / ৫৪

মাতা-পিতার উদ্দেশ্যে যৌবনে উদ্দীপ্ত এক টগবগে যুবকের চিঠি / ৫৬

বড়ভাইয়ের প্রতি এক তারুণ্যদীপ্ত ছোটভাইয়ের চিঠি / ৫৮

বড়বোনের কাছে এক ছোটভাইয়ের বেদনাভরা চিঠি / ৬০

অভিভাবকদের প্রতি এক যুবকের আক্ষেপভরা পত্র / ৬২

 

হে যুবসম্প্রদায়!

তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহের সামর্থ্য রাখে সে যেন বিয়ে করে ।

- আল হাদীস

 

বিবাহ একটি বৈধ ও প্রশংসনীয় কাজ। প্রত্যেক সামর্থ্যবান ব্যক্তির ক্ষেত্রেই এর গুরুত্ব অপরিসীম । বিয়ে করা নবি-রাসুলগণের আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন-وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلًا مِنْ قَبْلِكَ وَجَعَلْنَا لَهُمْ أَزْوَاجًا وَذُرِّيَّةٌ

অবশ্যই তোমার পূর্বে আমি রাসুলদের প্রেরণ করেছি এবং তাদেরকে দিয়েছি স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি । [সূরা রা'দ : ৩৮)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে বিবাহ করেছেন এবং এর প্রতি উদ্বুদ্ধ করতে গিয়ে বলেছেন- أَنزَوْجُ النِّسَاءَ فَمَنْ رَغِبَ عَنْ سُنْتِي فَلَيْسَ مِنِي.

'আমি নারীকে বিবাহ করেছি। (তাই বিবাহ আমার সুন্নত) অতএব যে আমার সুন্নাত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, সে আমার দলভুক্ত নয়। (মুসনাদে আহমদ : ১২৬৩৪]

এ জন্যেই আলিমগণ বলেছেন, সাগ্রহে বিবাহ করা নফল ইবাদতের চেয়ে উত্তম। কারণ, এর মধ্য দিয়ে অনেক মহৎ গুণের বিকাশ ঘটে এবং অবর্ণনীয় কল্যাণ প্ৰকাশ পায় ।

কারও কারও ক্ষেত্রে বিবাহ করা ওয়াজিব।  যেমন : যদি কেউ বিবাহ না করলে হারাম কাজে লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করে।  তখন নিজেকে পবিত্র রাখতে এবং হারাম কাজ থেকে বাঁচতে তার জন্যে বিয়ে করা ওয়াজিব হয়ে দাঁড়ায় । রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- مَعْشَرَ الشَّبَابِ مَنِ اسْتَطَاعَ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزُوجُ فَإِنَّهُ أَغَضُ لِلْبَصَرِ وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ ، وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصُّوْمِ فَإِنَّهُ لَهُ وِجَاءَ

হে যুব সম্প্রদায়, তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহের সামর্থ্য রাখে সে যেন বিয়ে করে। কেননা তা চক্ষুকে অবনত করে এবং লজ্জাস্থানকে হেফাজত করে। আর যে এর সামর্থ্য রাখে না, তার কর্তব্য রোজা রাখা । কেননা তা যৌন উত্তেজনার প্রশমণ ঘটায় । [বায়হাকি; সুনানু কুবরা : ১৪২১১, ইবনু মাজাহ : ১৯১৮/

বিবাহের প্রয়োজনীয়তা

মানুষের মধ্যে যে যৌন ক্ষমতা রয়েছে এর সৃষ্টি উদ্দেশ্যহীন নয়; বরং মানব বংশের বৃদ্ধিই এর লক্ষ্য। আর সে জন্যেই সৃষ্টি হয়েছে নারীর। ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে নারীকে গর্ভধারণের, সন্তান প্রসবের। আর মানুষ যেহেতু পশু নয়, তাই উচ্ছৃঙ্খলভাবে যত্রতত্র যৌনক্ষুধা নিবারণের অনুমতি দেওয়া হয়নি তাকে ।  বরং নিয়ম-নীতির আলোকে সুশৃঙ্খল পদ্ধতিতে সম্মানজনক পন্থায় কাম-চাহিদা পূরণ ও তা ফলপ্রদ করার পুণ্যময় রীতি প্রণয়ন করেছে শরিয়ত। আর তারই নাম বিবাহ-শাদি। যার অবর্তমানে যেভাবে মানুষ আর পশুতে ভেদাভেদ থাকে না, বিয়ের লক্ষ্য সাধিত না হলেও থাকে না মানব বংশের অস্তিত্ব । সুতরাং মানবজীবনের কল্যাণ ও স্থিতিশীলতার জন্যে বিয়ে এক গভীর তাৎপর্যময় সত্য ।

মানুষ যে খাবার গ্রহণ করে তা থেকে উৎপাদিত শক্তির নির্যাস হলো যৌনক্ষমতা । বিবাহের মাধ্যমে যা যথার্থ প্রবাহিত হতে পারে। যদি কোনো ব্যক্তি বিবাহ করার, স্ত্রীর ভরণ-পোষণ করার ক্ষমতা না রাখে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে রোজা রেখে শক্তি নিয়ন্ত্রিত করার পরামর্শ দিয়েছেন। মোটকথা, খানাপিনা যেভাবে মানবজীবনের অপরিহার্য প্রয়োজন, আহার নিবাসের প্রয়োজনীয়তা যেভাবে যুক্তিতর্কের ঊর্ধ্বে, একজন যৌবনদীপ্ত মানুষের সুস্থ জীবনযাপনের ক্ষেত্রে বিয়ের প্রয়োজনীয়তাও তেমনই । আর এ কারণেই কুরআন ও হাদিসে নির্দেশসূচক শব্দে উৎকীর্ণ করা হয়েছে বিবাহের আহ্বানকে ।

বিবাহের উপকারিতায় গবেষণা প্রতিবেদন

বিজ্ঞানীদের গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে যে, বিবাহের দ্বারা নিম্নোক্ত উপকারিতা পাওয়া যায়।  ১. আনন্দঘন দাম্পত্য জীবন দৈনন্দিন পেরেশানি এবং দুশ্চিন্তার মাঝে ঢালের মতো ভূমিকা রাখে।  ২. বিবাহিত লোকদের স্বাস্থ্য স্বাভাবিকভাবে অবিবাহিত লোকদের চেয়ে বেশি সুস্থ থাকে ।  ৩. বিবাহ মানুষকে অনেক খারাপ কাজ যেমন- মদপান, অবৈধ সম্পর্ক এবং সিগারেট পান থেকেও রক্ষা করে ।

অনুসন্ধানে এও দেখা গেছে যে, অবিবাহিতদের মধ্যে হার্টের রোগের কারণে মৃত্যুহার বিবাহিতদের চেয়ে অনেক বেশি।  তাছাড়া অবিবাহিত লোকেরা ক্যান্সার, আত্মহত্যা এবং আরো অন্যান্য প্রাণঘাতী রোগে বিবাহিত লোকদের তুলনায় অধিক আক্রান্ত হয়ে থাকে ।

বিবাহ কী

আরবি 'নিকাহ' শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ বিবাহ-শাদি, বিয়ে। ইসলামি পরিভাষায় ইচ্ছাকৃতভাবে একজন নারীর সারা শরীর দ্বারা আস্বাদিত হওয়ার আকদকে বিবাহ-শাদি বলা হয় ।

বিয়ে একজন সুস্থ মানুষের প্রাকৃতিক প্রয়োজন। মানুষের স্বভাবগত পরিচ্ছন্নতা, মানসিক ভারসাম্য ও চারিত্রিক পবিত্রতার অন্যতম উপায় বিবাহ-শাদি । এ কারণেই অনিন্দ্য সুখের বাসর জান্নাতে বসেও যখন আদম (আ.) অতৃপ্তিতে ভুগছিলেন তখনই আল্লাহ তায়ালা মা হাওয়া (আ.)কে সৃষ্টি করলেন তাঁর সঙ্গিনীরূপে । নর-নারীর যুগল বাঁধনে শুরু হলো মানবজীবন । রক্ত-মাংসে সৃষ্ট এই মানুষের মধ্যে যে প্রভূত যৌনক্ষুধা জমে ওঠে বয়সের পরতে পরতে তা একান্তই বাস্তব। সুতরাং ক্ষুধা যিনি দিয়েছেন সে ক্ষুধা নিবারণের পথও দেখাবেন তিনিই। আর তা হলো বিবাহ ।

বিবাহ করা সকল নবী-রাসুলের সুন্নাত। বিবাহ করা নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ। বিবাহের মাধ্যমে একজন মুমিন বান্দা আল্লাহর সমীপে পবিত্র হয়ে ওঠার পথ পায়। এক কথায় বিবাহের পবিত্র ছোঁয়ায় পরিচ্ছন্ন জীবন লাভ করে বিবাহিত মর্দে মুমিন । নবিজির আদর্শের রোশনিতে আলোকিত হয়ে ওঠে তার কর্মময় জীবন। ইসলামি শরিয়ত বিবাহকে পুরো দীনের অর্ধেক বলে আখ্যায়িত করেছে। কারণ শারীরিক, মানসিক ও চারিত্রিক উৎকর্ষ ও পবিত্রতা নির্ভর করে এর ওপর ।

বিবাহের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

অধিকাংশ গবেষকের মতে, বিবাহ হলো নারী-পুরুষ একে অপর থেকে উপকৃত হওয়া এবং আদর্শ পরিবার ও নিরাপদ সমাজ গড়ার উদ্দেশ্যে পরস্পর চুক্তিবদ্ধ হওয়া। এ সংজ্ঞা থেকে আমরা অনুধাবন করতে পারি যে, বিবাহের উদ্দেশ্য কেবল ভোগ নয়; বরং এর সঙ্গে আদর্শ পরিবার ও আলোকিত সমাজ গড়ার অভিপ্রায়ও জড়িত ।

‘সেক্স কালচার' প্রামাণ্য গ্রন্থের রিপোর্ট

বিশ্ববিখ্যাত ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটির ডক্টর আইডিমিয়াম পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের এবং পুরাতন গোত্রসমূহের লোকদের জীবনী অধ্যয়ন করেছেন। এ অধ্যয়নের পর তিনি সভ্য সমাজের লোকদের জীবনীও পাঠ করেছেন। তারপর তিনি এ বিষয়ক প্রামাণ্য গবেষণা রিপোর্ট স্বীয় বই 'সেক্স কালচার'- এ খুবই সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন । তিনি বইটির ভূমিকায় লিখেন— “আমি বিভিন্ন পদ্ধতিতে অনুসন্ধানের পর যে ফলাফল লাভ করেছি তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ হলো, প্রতিটি জাতি দুটি জিনিসের ওপর নির্ভর করে । একটি হলো তাদের সম্মিলিত জীবনব্যবস্থা, অপরটি হলো এমন আইনশৃঙ্খলা । যা তারা যৌন চাহিদার ওপর আরোপ করে। তিনি আরও লিখেন যে, যদি আপনি কোনো জাতির ইতিহাসে দেখেন যে, কোনো সময় তাদের সভ্যতা উন্নত হয়েছে অথবা নিচে নেমে গিয়েছে তাহলে আপনি খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন যে, তারা যৌন বিষয়ক আইনে রদবদল করেছে । যার ফলাফল সভ্যতার উন্নতি অথবা অবনতির আকৃতিতে প্রকাশ পেয়েছে।

ডক্টর আডিমিয়াম ৮০টি গোত্রের সভ্যতা সংস্কৃতির অধ্যয়ন করে যে সিদ্ধান্তে উপনীত হন তা হলো-

১. যে সকল গোত্রে বিবাহের পূর্বে যৌন চাহিদা মিটানোর অবাধ স্বাধীনতা ছিল, তারা স্বভ্যতার সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছেছিল ।

২. যে সকল গোত্রে বিবাহের পূর্বে যৌন চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে মোটামুটি আইনানুগ ব্যবস্থা ছিল, তারা সভ্যতার মধ্যস্তরে ছিল ।

৩. সভ্যতার সর্বোচ্চ শিখরে সে জাতিই অরোহণ করেছে, যারা বিবাহের পূর্বে যৌনাচার থেকে পুতঃপবিত্র ছিল। যারা বিবাহের পূর্বে যৌনাচারকে অবৈধ ও অপরাধ মনে করত তারাই শ্রেষ্ঠত্বের শিখরে পৌঁছুতে সক্ষম হয়েছে।

ডক্টর আইডিমিয়াম তার 'সেক্স কালচার' গ্রন্থে আরও মন্তব্য করেন যে, মনোবিজ্ঞানের অনুসন্ধানে জানা যায় যে, যৌনাচারের ওপর আইন আরোপ করা হলে তার অবশ্যম্ভাবী ফলাফল দাঁড়াবে এই যে, জাতির কর্ম ও চিন্তা- চেতনার শক্তি ও যোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু যে জাতি নারী-পুরুষকে অবাধ যৌনতার সুযোগ দেয়, তাদের কর্মক্ষমতা, চিন্তাশক্তি এবং যোগ্যতা ধ্বংস হয়ে যায় । রোমীয়দের অবস্থাও তাই হয়েছিল।  রোমীয়রা আইন কানুনের তোয়াক্কা না করে অবাধে পশুর ন্যায় যৌনতায় লিপ্ত হতো। ফলে তারা শারীরিক দিকে থেকে দুর্বল হয়ে পড়েছিল এবং কোনো কাজ করার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিল ।

ছেলে-মেয়ের প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার লক্ষণ

ছেলেদের প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার লক্ষণ : ছেলেদের প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার উল্লেখযোগ্য লক্ষণ হলো- স্বপ্নদোষ হওয়া, বীর্য নির্গত হওয়া; দাড়ি, গোঁফ, বগলের পশম কিংবা নাভীর নিচের পশম গজানো, গলার স্বর পরিবর্তন হওয়া অর্থাৎ কণ্ঠস্বর ভারি ও মোটা হওয়া ইত্যাদি ।

মেয়েদের প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার লক্ষণ : মেয়েদের প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার উল্লেখযোগ্য লক্ষণ হলো- স্বপ্নদোষ হওয়া, মাসিক ঋতুস্রাব হওয়া, মাধুর্যপূর্ণ কণ্ঠস্বর হওয়া, স্তনযুগল উন্নত হওয়া, সর্বাঙ্গে সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাওয়া, চেহারায় লাবণ্যতা দেখা দেওয়া, যৌন প্রদেশের আশপাশে ও বাহুসন্ধিতে পশম গজিয়ে প্রভৃতি ।

আমাদের দেশে মেয়েদের সাধারণত ১২/১৩ বছর এবং ছেলেদের ১৪/১৫ বছর বয়সে পূর্ণ যৌবনের লক্ষণসমূহ প্রকাশ পায় ।

উপরোল্লিখিত বয়সেও যদি তাদের মধ্যে এ ধরনের কোনো নিদর্শন পাওয়া না যায়, তাহলে পনেরো বছর বয়সে উপনীত হওয়ার দ্বারা উভয়কেই প্রাপ্তবয়স্ক ধরে নিতে হবে। ছেলেদের জন্যে বয়ঃপ্রাপ্তির সর্বনিম্ন সীমা ১২ বছর আর মেয়েদের জন্যে বয়ঃপ্রাপ্তির সর্বনিম্ন সীমা ৯ বছর। এই বর্ণনাটিই নির্ভরযোগ্য। ছেলে মেয়েরা যদি এ বয়সে উপনীত হয় এবং বলে যে, আমরা প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছি তাহলে তাদের কথা গ্রহণযোগ্য হবে । শর্ত হলো, তাদের এই কথা বাহ্যিক দৃষ্টিতে বিশ্বাসযোগ্য মনে হতে হবে। আর যদি বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে না হয়, তাহলে বক্তব্য গ্রহণ করা হবে না । [ফতোয়া শামী : ৫ম খ- কিতাবুল হিজর

এ সমাজ না মানছে বিজ্ঞান না মানছে ইসলাম। মানবজীবনে বিয়ের গুরুত্ব অপরিসীম।  বিয়ে মানুষকে দায়িত্ববান বানায় । জীবনে আনে স্বস্তি ও প্রশান্তি। বিয়ের মাধ্যমে নারী-পুরুষ সক্ষম হয় যাবতীয় পাপাচার ও চারিত্রিক স্খলন থেকে দূরে থাকতে । অব্যাহত থাকে বিয়ের মধ্য দিয়ে পৃথিবীতে মানব সভ্যতার ধারা। বৈধ ও অনুমোদিত পন্থায় মানুষ তার জৈবিক চাহিদা মেটায় কেবল এ বিয়ের মাধ্যমে। এক কথা বিয়েতে রয়েছে প্রভূত কল্যাণ ও অননুমেয় উপকারিতা। বিয়ের বিবিধ কল্যাণের প্রতি ইঙ্গিত করে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন-

وَمِنْ آيَاتِهِ أَنْ خَلَقَ لَكُمْ مِنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَاجًا لِتَسْكُنُوا إِلَيْهَا وَجَعَلَ بَيْنَكُمْ مَوَدَّةً وَرَحْمَةً إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ لِقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ

আর তাঁর নিদর্শনাবলির মধ্যে রয়েছে যে, তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের থেকেই স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি পাও। আর তিনি তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এর মধ্যে নিদর্শনাবলি রয়েছে সে কওমের জন্যে, যারা চিন্তা করে । [সূরা রুম : ২১/

বিয়ের সঙ্গে পৃথিবীতে মানুষের বংশ ধারার সম্পর্ক নির্দেশ করে । এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

تَزَوِّجُوا الْوَلُودَ الْوَدُودَ ، فَإِنِّي مُكَاثِرٌ بِكُمْ الأَنْبِيَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ

‘তোমরা অধিক সন্তানদানকারী স্বামীভক্ত নারীদের বিয়ে করো। কেননা কিয়ামতের দিন আমি তোমাদের (সংখ্যা) নিয়ে নবীদের সামনে গর্ব করব। [মুসনাদে

আহমদ : ১২৬৩৪/

বলাবাহুল্য যে, বিয়ে করা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত । অতএব, কেউ যখন বিয়ে করবেন তার উচিত বিয়ের করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা অর্জন করা ।

সময়মত বিয়ে না করার কুফল

সিডনীর এক প্রখ্যাত চিকিৎসক ডাক্তার ওয়াচার লোহাক। তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, যদি পরিণত বয়স হয়ে যাওয়ার পরও বিয়ে করতে দেরি করে, তবে সেক্স হরমোন কমতে কমতে এক সময় তা নিঃশেষ হয়ে যায়। গ্রন্থির রস কমে গিয়ে প্রথমে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায় এবং পরে ধীরে ধীরে কমতে থাকে ।

যৌবনের প্রারম্ভে বিবাহ না হলে সামাজিক অপরাধ বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকে । অপরাধের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পর বিবাহ করলেও সে তার অপকর্মের অভ্যাস পরিত্যাগ করতে পারে না। এভাবেই দিন দিন সমাজ অবনতির পথে অগ্রসর হতে থাকে। আর ব্যক্তি নিজে জড়িয়ে পড়ে ছোট থেকে বড় অন্যায়ের সঙ্গে ।

বর্তমান সমাজে সামাজিক অপরাধের মূল হোতা হলো যুব সমাজ। তাদের মধ্যে যৌন উত্তেজনা বেশি। আর এ উত্তেজনা ব্যভিচারকে সহজ বানিয়ে দিয়েছে ।

এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বর্তমানে পুরো ইউরোপ তথা প্রেসিডেন্ট- প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সমাজের সর্বনিম্ন পর্যায়ের মানুষ পর্যন্ত ব্যভিচারে লিপ্ত । এর কারণ হিসেবে দেখা গেছে, যাদের প্রাপ্ত বয়সে বিয়ে হয়নি, তারাই নানা অজুহাতে নানা পদ্ধতিতে যৌন চাহিদা চরিতার্থ করতে সামাজিক অন্যায়ে লিপ্ত হয়ে পড়ছে। আর এ কারণেই ইসলামে যে ক'টি কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সর্বাগ্রে করার নির্দেশ এসেছে, তন্মধ্যে ছেলেমেয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করা অন্যতম । আমেরিকান ডাক্তারদের সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, বর্তমান পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী কুমারদের তুলনায় বিবাহিতরা অধিক সুস্থ থাকে ।

গবেষণা অনুযায়ী জানা গেছে যে, বিবাহিত লোকদের নেশার প্রতি আগ্রহ খুব কম থাকে । তারা নিজেদের খাদ্যের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখে । এক সঙ্গী সকল ব্যাপারেই অপর সঙ্গীকে সহায়তা দেয়। তারা নিয়মিত ব্যায়াম করে । এ ব্যাপারে মার্কিন স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীগণ উনিশ হাজার লোকের ওপর জরিপ চালানোর পর দেখা গেছে যে, অ্যাজমা থেকে মাথা ব্যথা পর্যন্ত প্রায় সকল রোগে কুমারদের তুলনায় বিবাহিতরা কম আক্রান্ত হয়ে থাকে ।

“ইসলাম আওর জাদীদ সায়েন্স' গ্রন্থকার ডা. মুহাম্মদ তারেক মাহমুদ লিখেছেন, বৃটিশ ম্যারেজ প্লাস ওয়ান ইউরোপ এবং আমেরিকায় ব্যাপক গবেষণা করার পর এ সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ করেছে যে, বিবাহিত লোকেরা দীর্ঘ জীবন লাভ করে । তাদের স্বাস্থ্যও সুস্থ থাকে। তাদের ওপর মানসিক এবং শারীরিক রোগ খুব কম প্রভাব ফেলতে পারে। তারা দুর্দশাগ্রস্ত থাকে খুবই কম। আর্থিক দিক থেকে তারা থাকে স্বয়ংসম্পূর্ণ । পক্ষান্তরে যারা কুমার জীবন যাপন করে অথবা বিধবা কিংবা তালাকপ্রাপ্তা হয় তাদের ব্যাপারটি এদের সম্পূর্ণ বিপরীত ।

অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ে করার ক্ষতি

ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের বিবাহের নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। অধিক বয়সে বিবাহ করা যেমন ক্ষতিকর তেমনি অল্প বয়সে বিবাহের মধ্যেও রয়েছে নানা ক্ষতিকর দিক । আর এ ক্ষতি যেমন রয়েছে ছেলের জন্যে তেমনি রয়েছে মেয়ের ক্ষেত্রেও। অল্প বয়সে বিবাহের দ্বারা ছেলেদের স্বাস্থ্যহানি ঘটা, কর্মক্ষমতা হ্রাস পাওয়া, অকাল বার্ধক্যে পতিত হয়ে সীমাহীন দুঃখে কষ্টে জীবনযাপন করা অল্প বয়সে বিয়ের ভয়াবহ ক্ষতিকর দিক ।  তাছাড়া অপরিণত বয়সে স্ত্রী সম্ভোগের ফলে যে সন্তান জন্ম নেয় তা অত্যন্ত ক্ষীণ, দুর্বল ও রোগাটে হয়ে থাকে । একই সাথে তাদের বুদ্ধিও কম হয় ।  এমনকি কখনও অকাল মৃত্যুও হয়ে থাকে ।  আর মেয়েদের অল্প বয়সে গর্ভধারণের ফলে স্বাস্থ্য একেবারে ভেঙে পড়া, সাংসারিক কাজকর্ম দেখাশোনা ও গোছানোর দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বেচারির দফারফা হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক । সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর বয়সের স্বল্পতা ও অভিজ্ঞতার অভাবে সন্তানের কোনো রূপ সেবাযত্ন ও পরিচর্যা করা সম্ভব হয় না। অন্যদিকে স্বামীর বাড়ির লোকজন যদি একটু বদমেজাজি হয়ে যায়, তাহলে তো লাঞ্ছনা গঞ্জনার সীমাই থাকে না। অল্প বয়সি বধূকে নিয়ে তারা উষ্টাউষ্টি করতে কুণ্ঠাবোধ করে না ।

যৌবন এক পাগলা ঘোড়া

অধিক বয়সে বিবাহ শাদিতে ছেলে ও মেয়ে উভয়ের জন্যে ক্ষতি রয়েছে। যৌবনকাল মানুষের জন্যে যেমন সময়, অপরদিকে বিপজ্জনকও । যৌবন মানুষকে পাগলা ঘোড়ার ন্যায় দৌড়াতে থাকে । যৌবনের চাহিদা দুরন্ত। এ সময় ছেলেমেয়েদেরকে যৌনচাহিদা অস্থির করে তোলে। এ অবস্থায় যুবক যুবতিরা মনের আনন্দে, সুখের নেশায়, রঙিন স্বপ্ন ও ভবিষ্যৎ জীবনের আরাম আয়েশ উপভোগের জন্যে মনে মনে বিভিন্ন কল্পনা জল্পনা করতে থাকে। ইন্দ্রিয়ের তাড়নায় কামলিপ্সা চরিতার্থ করার জন্যে যুবক যুবতির সান্নিধ্য এবং যুবতি যুবকের সান্নিধ্য লাভ করতে ব্যাকুল হয়ে ওঠে। যথাসময়ে তার চাহিদা বৈধ পন্থায় পূরণ করতে না পারলে তার দ্বারা অনাকাঙ্ক্ষিত যে কোনো কর্মকা-ের সৃষ্টি হতে পারে । এর দ্বারা ব্যক্তির মান মর্যাদা তো যাবেই, পাশাপাশি বিকৃত যৌনাচারে অভ্যস্থ হওয়ার ফলে জীবনের চরম ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষত আজকের এই টেকনোলজি বা তথ্যপ্রযুক্তির যুগে বিস্তারিত বিবরণ নিষ্প্রয়োজন ।

টিভি, ভিসিআর, ডিশ এন্টেনা, ইন্টারনেট, ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার, মোবাইল, সিনেমা, অশ্লীল পত্র-পত্রিকা, ম্যাগাজিন এবং ফর্নোগ্রাফির বদৌলতে বাল্য বয়সেই তো অধিকাংশ কিশোর কিশোরী পূর্ণ বয়স্ক যুবক যুবতি ও স্বামী-স্ত্রীর মতো আচরণ করে। তারপরও যদি পরিপক্ক যুবক যুবতিরা যথাসময়ে বিয়ে শাদি না করে তাদের দ্বারা অস্বাভাবিক কিছু ঘটে যাওয়া মোটেও বিচিত্র নয়। মূলত হচ্ছেও তাই। এ দোষে আক্রান্ত নয়, এমন ব্যক্তির সংখ্যা হাতেগোণার পর্যায়ে এসে পৌঁছার উপক্রম হয়েছে। এরূপ পরিস্থিতিতে পূর্ণ যৌবনপ্রাপ্ত অবিবাহিত নারী-পুরুষের পক্ষে, নিজেদের চরিত্র সংরক্ষণ করা কতটুকু সম্ভব? তাই সব বিষয় বিবেচনা করে উপযুক্ত বয়সে বিবাহ শাদি করাই অধিক যুক্তিযুক্ত। এতে ঈমান ও জীবন উভয়ের পূর্ণতা পায় ।

ছেলে মেয়ের বিয়ের বয়স

বিয়ের প্রকৃত বয়স কত— এ নিয়ে মহাবিপাকে দুনিয়ার মানুষ । অনেক অভিভাবক কুয়ারার সুরে বলে থাকে যে, 'এখনও ছেলে বা মেয়ের বিয়ের বয়স হয়নি। আর কয়েক বছর অপেক্ষা করি। তারপরই না হয় তাদের বিয়েটা দিই। ছেলেমেয়ের পড়ালেখাটাও একটা পর্যায়ে পৌঁছুক কিংবা কোনো চাকরি বাকরি ধরে ফেলুক। না হয় বিয়ে করে তারা খাবে কী? বউকে দিবে কী? তাছাড়া পড়ালেখা শেষ না করে বিয়ে করলে লোকসমাজে মুখ দেখাই কিভাবে?' ইত্যাকার প্রশ্ন আমাদের সমাজে দীর্ঘদিন থেকেই চলে আসছে।

জাতিসংঘ ছেলে-মেয়ে উভয়ের প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার বয়সসীমা নির্ধারণ করেছে আঠারো। এর আগে সবাই শিশু। তাই আঠারো বছরের আগে কোনো ছেলে কিংবা মেয়ের বিয়ে দেওয়া কথিত আন্তর্জাতিক আইনে সিদ্ধ নয়।  কিন্তু বাস্তবে জাতিসংঘের প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার এই বয়স নির্ধারণ করা কতটা যুক্তিযুক্ত?

প্রকৃতপক্ষে বিয়ের প্রকৃত বয়স কত ?

এ প্রশ্নের জবাবে আমার দ্বিধাহীন বক্তব্য হলো, আপনি নিজ থেকে প্রথম যেদিন নিজের সাবালকত্ব সম্পর্কে পূর্ণ অনুভূতি লাভ করবেন, সেটাই আপনার বিয়ের উপযুক্ত বয়স।

সব বিষয় দলিল-প্রমাণ দিয়ে হয় না। বিয়ের বয়স নির্ধারণের জন্যেও কোনো দলিল-প্রমাণ তলবের প্রয়োজন নেই। কারণ কারও মতে বিয়ের বয়স হচ্ছে ত্রিশ । কেউ আবার মত দিয়েছেন চল্লিশ ।

আমার জবাব হলো- আল্লাহ মানুষকে যে ফিতরাতের ওপর সৃষ্টি করেছেন, তার অনুকূল হলেই বিয়ে করে ফেলা ব্যক্তি ও সমাজ উভয়ের জন্যেই কল্যাণকর । আমার দেওয়া জবাবটি বোঝার জন্যে একটা ভূমিকা উল্লেখ করা প্রয়োজন ।

মনে রাখবেন যে, আল্লাহ মানুষকে দুটি স্বভাবজাত গুণ দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। একটি হলো মানবসত্তার সংরক্ষণ ভাবনা । এই ভাবনার কারণেই আমাদের ক্ষুধা লাগে। দ্বিতীয়টি হলো জাতিসত্তার সংরক্ষণ চেতনা । এই চেতনার তাগিদেই বংশধারা টিকে আছে । এই দুটির একটি বিশুদ্ধ প্রমাণিত হলে অপরটিও নির্ভুল মেনে নিতে হবে ।

আচ্ছা বলুন তো, মানুষ কখন খাবার গ্রহণ করে? আপনি অবশ্যই এ প্রশ্নের জবাবে বলবেন যে, যখন খাওয়ার চাহিদা হয় কিংবা ক্ষুধা লাগে তখনই মানুষ খাবারের প্রতি আগ্রহী হয়ে থাকে । আপনার এই জবাবের সূত্র ধরেই আমি বলব যে, মনের মাঝে জৈবিক চাহিদা পূরণের চাহিদা জন্ম নিলে কিংবা যৌন চাহিদা পূরণের তাগাদা অনুভব করলেই বিয়ের প্রকৃত বয়স হয়ে থাকে ।

কথাটাকে খোলাসা করার জন্যে আবার বলছি-

মানুষ কখন খাবার খায়?

জবাবে আপনারা বলবেন, যখন ক্ষুধা লাগে তখন ।

তো আমিও বলব, বিয়ে তখনই করবেন, যখন কামনার উদ্রেক হয়, মনের সুপ্ত বাসনা জাগ্রত হয়। অর্থাৎ যে সময়ে পৌরুষ আসে, যৌবন আসে তখন । মোটামুটি সর্বোচ্চ আঠারো বছর ধরা যায়।  আপনারা প্রশ্ন করবেন, এ বয়সে পৌঁছার পরও যদি বিয়ে করার মতো অর্থ হাতে না থাকে, তাহলে কী করব?

আমি বলব, ক্ষুধার্ত ব্যক্তির কাছে পয়সা না থাকলে সে যা করে, এই যুবকও তা-ই করবে । খাবার হাতে আসা পর্যন্ত ধৈর্য ধরবে ।  আপনারা বলবেন, যদি ক্ষুধার্ত ব্যক্তি ধৈর্য ধরতে না পেরে সামনে অন্যের খাবার উপস্থিত পেয়ে চুরি করে খেয়ে ফেলে এবং হারাম কাজে লিপ্ত হয়, তাহলে আমরা কী করব?

এক্ষেত্রে আমার বক্তব্য হলো, প্রতিটি সমাজে অনাহারীদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়, যেন তারা চুরি বা কোনো অপরাধে জড়িয়ে না পড়ে। যদি কোনো কারণে সমাজের লোক খাবারের যোগান দিতে না পারে এবং তাদের থেকে চুরির আশঙ্কা করে, তাহলে সাধারণ মানুষের কর্তব্য হলো, যার যার মাল ও অর্থসম্পদ হেফাজত করা। এখন যদি বলেন যে, তাদের চুরি করা একদিকে বৈধ! কারণ, সমাজ তাদেরকে খাদ্যবঞ্চিত করেছে; অথচ এটা তাদের জৈবিক অধিকার? অপরদিকে অবৈধ! কারণ অন্যের সংরক্ষিত জিনিসে তারা হাত লাগিয়েছে। ঠিক একই কথা বিবাহের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য ।

বিয়ের বয়স নিয়ে ভানুমতির খেল

মূলত বিবাহের স্বাভাবিক বয়স হলো যে বয়সে ছেলেমেয়ে বালেগ বালেগা হয় । কিন্তু এ বয়সে তারা স্কুল-কলেজে বা মাদরাসায় পড়াশোনা করে । তাদের হাতে তেমন অর্থকড়িও থাকে না । প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ‘কমপক্ষে পঁচিশ বছর পর্যন্ত চলতে থাকে । অর্থাৎ যে সময়ে পারস্পরিক মিলনের সূত্রপাত হওয়ার কথা, ঠিক সে মুহূর্তে তাদের সামনে স্বভাববিরুদ্ধ বিশাল বাধা আপতিত হয় ।

তাহলে আমরা এর মোকাবেলা কিভাবে করতে পারি? কী করার আছে এই যুবকের? সে তো এই দশটা বছর বিয়ে ছাড়া কাটিয়ে দিতে বাধ্য। অথচ যৌন চাহিদা জীবনের এই দশ বছরই সর্বাধিক হয়ে থাকে !

আল্লাহ তায়ালা তার দেহের মাঝে জ্বলন্ত অগ্নি স্থাপন করে দিয়েছেন। যদি এই আগুন বিয়ের মাধ্যমে না নেভানো হয়, তাহলে এর তাপে হয়তো নিজে দগ্ধ হবে নতুবা ব্যভিচারের মাধ্যমে অন্যের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেবে । এখানেই হলো মূল সমস্যা। এ নিয়েই আলোচনা করা দরকার ।

আমি মনে করি, বিয়ের প্রকৃত বয়স নিয়ে আমাদের অভিভাবকরা বিটলামি করে থাকেন । কারণ যিনি এ বিষয়ে কলম ধরবেন, তার জন্যে সবচেয়ে সহজ হলো চেয়ারে হেলান দিয়ে গভীর চিন্তামগ্ন হয়ে বসা। এরপর রায় ঘোষণা করা । কিন্তু আপনারা হয়তো পড়ালেখা, কর্মযজ্ঞ, প্রতিষ্ঠিত হওয়া, চাকরি করা ইত্যাদি মিলিয়ে বলবেন যে, বিয়ের উপযুক্ত বয়স হলো ত্রিশ বছর!

আমি বলব, এটা আপনার কেবলই ব্যক্তিগত অভিমত। এ দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না । শুধু ফ্রি কথা বললেই তো আর হলো না। যে বিচারক ফাঁসির রায় ঘোষণা করেন, এখানে তার কষ্ট-ক্লেশের কী আছে? কেবল ঠোঁট দুটো নাড়িয়ে একটা মত প্রকাশ করে দেন। কিন্তু মুসিবত হয় তার, যার বিরুদ্ধে রায় হয় এবং কার্যকর হয়। আর এখানে রায় প্রকাশ করা হচ্ছে যুবক-যুবতির বিরুদ্ধে । তাই আপনার ত্রিশ বছর বলতে কষ্ট না হলেও এত বছরে তাদের অবস্থা মহাবিপর্যয় পয়দা করে ছাড়বে।

মনে রাখবেন, প্রকৃতিগতভাবে বয়স পনেরো হলেই তবিয়ত ও সুপ্ত চাহিদা যুবক-যুবতির ভেতরে যৌনক্ষুধা জাগিয়ে তোলে। কিন্তু আমাদের চিন্তাশীল শ্রদ্ধেয় ভ্রাতৃ মহোদয় তাদের জন্যে মত প্রকাশ করে বলেন, ত্রিশের আগে বিয়ে করা যাবে না । আমার জিজ্ঞাসা হলো, তাহলে বাকি পনেরো বছর সে কী করবে? কুড়িতে যে বুড়ি হয়- সেই প্রাচীন প্রবাদ তো আর অভিজ্ঞজনরা এমনিতেই বলে যাননি।

যে সমাজ যুবককে বিয়ে করতে নিষেধ করে, তারা এই আগুন নিভানোর বিকল্প কোনো পথ বের করতে পারেনি। যখনই বেচারা এই যৌনক্ষুধা কিছুটা হলেও প্রশমিত করতে পারে, তখনই আমরা তাকে সেই তাড়না স্মরণ করিয়ে দিই নগ্ন ফিল্ম উলঙ্গ-অর্ধউলঙ্গ চিত্রাবলি, পথেঘাটে তরুণীদের অবাধ চলাফেরা ও মেলামেশার মাধ্যমে। মনে রাখবেন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ ও নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রদর্শিত পথ অনুকরণ ব্যতীত মানুষ অন্যায় কাজ থেকে নিজেকে তেমন বাঁচিয়ে রাখতে পারে না ।

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষণা করেছেন- كل أمتي يدخلون الجنة إلا من أبي فقالوا يا رسول الله من أبي؟ قال من أطاعني دخل الجنة ومن عصاني فقد أبى

যারা আমাকে অস্বীকার করে তারা ব্যতীত আমার সব উম্মত জান্নাতে প্রবেশ করবে। সাহাবিরা এ কথা শুনে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! কারা অস্বীকার করে? জবাবে রাসুল সা. বললেন, যে আমার অনুকরণ করল সে জান্নাতে প্রবেশ করল। আর যে আমার নাফরমানি করল, সেই আমাকে অস্বীকার করল।  [বুখারি শরীফ

মনে রাখবেন! একজন নারী পথে হাঁটলেও নারী; বাজারে গেলেও নারী; কলেজে এলেও সে নারী। সবখানেই রয়েছে তার সুপ্ত চাহিদা জাগরিত করার ইন্ধন । কিন্তু আমরা এই আগুন বুকের ভেতর পনেরো বছর জ্বালিয়ে রাখার রায় ঘোষণা দিচ্ছি। সাথে সাথে তাকে বলছি, ক্যাম্পাসে যাও, দরসে যাও, অধ্যয়নে ব্যস্ত হও। তাকে উপদেশ দিচ্ছি যে, অন্যায়-অশ্লীল কাজ থেকে বিরত থাকা তোমার কর্তব্য ।

পৃথিবীর সস্তা জিনিস হলো কাউকে উপদেশ প্রদান করা । আমরা যুবককে অন্যায় অপরাধ থেকে ফিরে থাকার আসল পথ অনুসরণ না করে তার মাথায় উপদেশের কাঁঠাল ভাঙতেই বেশি সাচ্ছন্দ্যবোধ করে থাকি । এক্ষেত্রে আমি আল্লাহর শপথ করে বলতে পারি, যে ব্যক্তিকে পনেরো বছর জেলে বন্দি রাখার হুকুম দেওয়া হয়েছে, তার অবস্থা এ যুবকের চেয়ে করুণতর নয়।  তাহলে এখন উপায় কী?

একটিই পথ। তাহলো স্বভাবধর্মের দিকে ফিরে আসা এবং ফিতরাতের অনুসরণ করা। কারণ, একজন মানুষ জাতিগত স্বভাবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করতে পারে না। একজন যুবক বিয়ে করবে আঠারো বছর বয়সে। যুবতির বয়স হবে ষোলো কিংবা সতেরো বছর। যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে আমাদের সন্তানদের হৃদয়ে আল্লাহর ভয় সৃষ্টি এবং উন্নত চরিত্র ও আদর্শ নীতি চালু করা যাবে না। যুবক-যুবতিদেরকে নীতি-নৈতিকতার ওপর প্রতিষ্ঠিত করার পাশাপাশি সমাজ ও পরিবেশকে অশ্লীলতা, পাপাচার ও যৌন চাহিদা উদ্রেককর অবস্থা থেকে মুক্ত করতে হবে। মেয়েদের ব্যাপারে বাবা ও ভাইদের দায়িত্ববান এবং তাদের সম্পদ ও সম্ভ্রম বিনষ্টের কারণ সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।

আমি আশাবাদী, যিনি এই লেখাটি পাঠ করবেন তিনি অবশ্যই বলবেন যে, এটি সঠিক । কিন্তু আফসোসের বিষয় হলো, কেউ আমলে নেন না । কেউ এ বাস্তব সত্যকে বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেন না; বরং সবাই উল্টো রথে চলতে যেন পছন্দ করেন।

দেরিতে বিবাহের ভয়াবহতা

ইসলাম যুবক-যুবতি প্রাপ্ত বয়স্ক হলেই তাদেরকে বিয়ের পিঁড়িতে বসিয়ে দেওয়ার জন্যে উৎসাহিত করেছে। এর ফলে সমাজদেহে ব্যভিচারের বিষবাষ্প ছড়ানোর সুযোগ পায় না। পক্ষান্তরে পাশ্চাত্য সভ্যতার দোহাই দিয়ে আজ যুবক যুবতিদের দেরিতে বিবাহ দেওয়া হয়। ফলে বিয়ের আগেই তারা নানাভাবে বিয়ের স্বাদ উপভোগ করতে উৎসুক হয়ে পড়ে ।

তথাকথিত পুঁজিবাদী সমাজের বেঁধে দেওয়া বিয়ের বয়সের কারণে 'Late Marriage' তথা দেরিতে বিবাহের প্রচলন দিন দিন বেড়েই চলেছে। গবেষকগণ এর প্রধান কারণ আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন। তাহলো, পুঁজিবাদী সমাজ অর্থনীতিকে বেশি গুরুত্ব দেয়। যে কোনো বিষয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবার সময় তারা মূলত সেই 'Economical' তথা অর্থনৈতিক দিকের কথা চিন্তা করেই সিদ্ধান্ত দেয়। "Biological Physical" দিক তারা বেশি গুরুত্ব দেয় না ।

ছেলে মেয়ের বিয়ের ক্ষেত্রেও পুঁজিবাদীরা "Economical" দিক বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। অথচ এখানে তাদের বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কথা ছিল "Biological", "Spiritual" ও "Moral" দিককে। ফলে যা হবার তাই হচ্ছে। মানুষ দেরিতে বিয়ে করে মানসিক ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যাচ্ছে । নানা কারণে ডিভোর্স এর ঘটনা মাত্রাতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। "Late Marriage" তথা দেরিতে বিবাহের কারণে নারী-পুরুষ উভয়ই তাদের বিবাহিত জীবনে নানা ধরনের ঝামেলার মুখোমুখি হয় । নিচে নারী ও পুরুষের লেট ম্যারেজের ভয়াবহতা তুলে ধরা হলো ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪